আজ

  • শনিবার
  • ২০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • ৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

জোট শরিকদের জন্য আ.লীগের ৭০ আসন

আপডেট : সেপ্টেম্বর, ২, ২০১৮, ১২:১০ অপরাহ্ণ


জোটের শরিকদের জন্য ৬৫ থেকে ৭০টি আসন ছেড়ে দেওয়ার চিন্তাভাবনা আছে আওয়ামী লীগের। তবে এটি কোনো ধরাবাঁধা বিষয় নয় বলছে দলটি। তারা বলছে, নির্বাচনে জয়ী হওয়ার মতো অবস্থা যাঁর আছে, তাঁকেই মনোনয়ন দেওয়া হবে।

আজ শনিবার বিকেলে ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের সম্পাদকমণ্ডলীর এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভা শেষে সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এ কথা জানান।

ওবায়দুল কাদের বলেন, আওয়ামী লীগ জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে। এ মাসেই কার্যক্রম পুরোপুরি শুরু হবে। জোট নিয়েও পরোক্ষভাবে আলাপ-আলোচনা চলছে। যারা দলের এত দিনের শরিক, তাদের বিষয় নিয়ে কথা হয়েছে। অনেকে আসতে চাচ্ছে, তাদের সঙ্গেও কথাবার্তা শুরু হয়েছে।
মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, জোটে আলাপ-আলোচনা চলছে, এ মাসের শেষ দিকে চূড়ান্ত আকার নেবে। বেশি দূর গেলে অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত যেতে পারে। তিনি বলেন, ‘আমাদের জোটের জন্য ৬৫ থেকে ৭০টি আসন ছেড়ে দেওয়ার চিন্তাভাবনা আছে। এখানেও কথা আছে, এটা কোনো ধরাবাঁধা বিষয় না। ভালো প্রার্থী হলে দেওয়া হবে। উইনেবল প্রার্থীকে আমরা মনোনয়ন দেব। অ্যালায়েন্সের যেকোনো দলেরই হোক, আমরা তাদের অ্যাকসেপ্ট করব। প্রার্থী উইনেবল হলে আমরা মনোনয়ন দেব।’

সভায় দেশের সর্বশেষ অবস্থা এবং দলের সাংগঠনিক অবস্থা নিয়ে আজকের সম্পাদকমণ্ডলীর সভায় আলোচনা হয়েছে বলে ওবায়দুল কাদের জানান। তিনি বলেন, জেলা পর্যায়ে তৃণমূলের অবস্থা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সামনে ট্রেনে করে উত্তরাঞ্চলে সাংগঠনিক সফরে যাওয়ার পরিকল্পনা আছে বলেও তিনি জানান।

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির কাছে তিনটি প্রশ্নের জবাব চান সেতুমন্ত্রী কাদের। তিনি বলেন, ‘আমার প্রথম প্রশ্নটি হচ্ছে, ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর হত্যাকারীদের বিচারের পথ রুদ্ধ করতে ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি এবং এরপর এই অধ্যাদেশকে পঞ্চম সংশোধনীতে অন্তর্ভুক্ত করার ব্যাখ্যা কী? দুই. বিনা পয়সায় সাবমেরিন কেবল প্রত্যাখ্যান করার মাধ্যমে দেশকে পিছিয়ে দেওয়ার যে কাজটি বিএনপি করেছে, এর ব্যাখ্যা কী? তিন. খালেদা জিয়ার রায়ের আট দিন আগে বিএনপির গঠনতন্ত্র থেকে কেন সাত ধারা বাতিল করে দেওয়া হলো?’

নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগে বর্তমান সরকারের পদত্যাগ দাবি এবং খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবি করেছে বিএনপি, এ বিষয়ে সাংবাদিকেরা দৃষ্টি আকর্ষণ করলে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘প্রথম বিষয়টি সংবিধানসম্মত নয়। আর দ্বিতীয় বিষয়টি আইনি বিষয়। বিএনপি যদি মামলা মোকাবিলা করে আইনি প্রক্রিয়ায় খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে আনতে পারে, ওয়েলকাম। সরকার যদি বাধা দিত, সরকার যদি বিচার বিভাগকে কোনো প্রকারে প্রভাবিত করতে চাইত, তাহলে খালেদা জিয়া এতগুলো মামলা থেকে জামিন পেতেন না। প্রায় ৩০টি মামলায় তিনি জামিন পেয়েছেন, সরকার যদি হস্তক্ষেপ করত তাহলে কীভাবে এসব মামলা থেকে তিনি জামিন পেলেন?’

আইনি প্রক্রিয়ায় খালেদা জিয়ার মুক্তি সম্ভব নয়, মওদুদ আহমদের এমন বক্তব্য সম্পর্কে জানতে চাইলে কাদের বলেন, ‘মওদুদ আহমদের কাছ থেকে আইনি প্রক্রিয়া শিখতে হবে? তিনি এমনও বলেছেন, সংবিধানের বাইরে গিয়েও নির্বাচনের ব্যবস্থা করা যায়।’ তিনি আরও বলেন, ‘মওদুদ নিজেই আইন লঙ্ঘন করেন। তিনি মৃত ব্যক্তির নামে ভুয়া সার্টিফিকেট আদালতে জমা দিয়ে ৪০ বছরের দখল করা বাড়িটা রক্ষা করতে পারেননি। যিনি অপচেষ্টার দালাল। তাঁর পক্ষে এ ধরনের দাবি আমরা সেভাবে নিচ্ছি না।’

বিএনপির বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বাংলাদেশের ইতিহাসে এত ব্যর্থ অপজিশন, এত ব্যর্থ বিরোধী দল আর আসেনি। এই ব্যর্থতার জন্য বিএনপির টপ টু বটম সকল নেতার পদত্যাগ করা উচিত।’ তিনি বলেন, ‘মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, মওদুদ আহমদ, খন্দকার মোশাররফ হোসেন রাস্তায় দাঁড়িয়ে মাইক দিয়ে কয়েকজনকে নিয়ে আওয়াজ দিলেই কি সরকার হটে যাবে? এই সরকারের গণভিত খুবই শক্তিশালী, এই সরকারের গণভিত বাংলাদেশের মাটির অনেক গভীরে প্রোথিত।’

জনগণের রায়ের ওপর আস্থা নেই বলে সরকার ইভিএমে নির্বাচন করার ষড়যন্ত্র করছে, বিএনপির এমন অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘ইভিএম আমাদের নতুন কোনো দাবি নয়। সারা দুনিয়ায় আধুনিক স্বচ্ছ এবং স্বল্প সময়ে ভোট প্রদান, গণনা এবং ফলাফল জানা যায় ইভিএমে। এটা সর্বশেষ প্রযুক্তি।’ তিনি আরও বলেন, ‘ইভিএম নিয়ে বিএনপির কেন ভয় সেটা আমরা বুঝে ফেলেছি। বিএনপির ভয় হচ্ছে ইভিএমে ভোট হলে বিএনপি আর কেন্দ্র দখলের পুরোনো অভিযোগ আনতে পারবে না। ভোট জালিয়াতির কথা বলতে পারবে না। ভোট কারচুপির কথা বলতে পারবে না। বিএনপি আর পোলিং এজেন্টদের বের করে দেওয়ার পুরোনো অভিযোগ আনতে পারবে না, এ কারণেই বিএনপি ইভিএম চায় না।’

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, দীপু মণি, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমান, প্রচার সম্পাদক হাছান মাহমুদ, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, এনামুল হক শামীম, কৃষিবিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী, আন্তর্জাতিক সম্পাদক শাম্মী আহমেদ, ত্রাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, উপদপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া প্রমুখ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

error: Content is protected !!