আজ

  • শুক্রবার
  • ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

বাংলাদেশে কাজ করা কয়েকটি প্রতিষ্ঠানকে নিষিদ্ধ করল বিশ্বব্যাংক

আপডেট : অক্টোবর, ৫, ২০১৮, ১:৫৮ পূর্বাহ্ণ


স্টাফ রিপোর্টার>>> দিদরুল আলম
আত্মসাৎ, ক্ষমতার অপব্যবহারসহ দুর্নীতিবিরোধী কার্যক্রমের অংশ হিসেবে বাংলাদেশের প্রকল্পে কাজ করা বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানকে নিষিদ্ধ করেছে বহুপাক্ষিক ঋণদাতা সংস্থা বিশ্বব্যাংক। নিষেধাজ্ঞার মেয়াদের মধ্যে এরা ব্যাংকটির কোনো প্রকল্পে কাজ করতে পারবে না।
বুধবার প্রকাশিত সংস্থাটির নতুন প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
বিশ্বব্যাংক জানায়, তাদের অনুসন্ধানে বাংলাদেশের বেশ কিছু প্রকল্পে তারা দুর্নীতি ও অর্থ আত্মসাতের খোঁজ পেয়েছে।
২০১৮ অর্থবছরে বিশ্বে ৭৮ কোম্পানি ও ব্যক্তির প্রতি নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে ব্যাংকটি। সংস্থাটির গ্রুপ স্যাংকশন সিস্টেমের বার্ষিক প্রতিবেদনে এ তালিকা প্রকাশ করা হয়।
ইন্টেগ্রিটি ভাইস প্রেসিডেন্সি (আইএনটি), অফিস অব সাসপেনশন অ্যান্ড ডিপার্টমেন্ট (ওএসডি) ও স্যাংশন বোর্ড এ প্রতিবেদন তৈরি করে।
এতে বলা হয়, যে কোনো প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তির পাঁচটি দুর্নীতির অন্তত একটির সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার কারণে এসব নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। দুর্নীতিগুলো হল- আত্মসাৎ, দুর্নীতি, আঁতাত, বলপ্রয়োগ বা ক্ষমতার অপব্যবহার কিংবা দায়িত্বে বাধা দেয়া।
কোনো প্রতিষ্ঠানের এই পাঁচ অপরাধের যে কোনো একটির সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা থাকলেই সেটিকে নিষিদ্ধ করছে বিশ্বব্যাংক। বাংলাদেশের প্রকল্পে বিনিয়োগ করা বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি নিষিদ্ধ হয়েছে ভারতীয় কোম্পানিগুলো।
তিন মাস থেকে শুরু করে ১০ বছর পর্যন্ত বিভিন্ন মেয়াদে চারটি ভারতীয় প্রতিষ্ঠানকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এর মধ্যে অলিভ হেলথকেয়ারকে ১০ বছর ছয় মাস, জয় মোদিকে সাত বছর ছয় মাস, ফ্যামি কেয়ার লিমিটেডকে চার বছর ও ম্যাসলেদোস ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড তিন মাস নিষিদ্ধ করা হয়।
এ ছাড়া অন্যান্য বিদেশি প্রতিষ্ঠান হচ্ছে- চীন প্রতিষ্ঠান মিডল সাউথ ইউনিয়ন ইলেকট্রিক কো লিমিটেড (চার বছর), ফ্রান্সের অবেরথার টেকনোলজিস (দুই বছর ছয় মাস), বেলজিয়ামের একার্ট অ্যান্ড জিগলার বেবিগ (দুই বছর), সুইজারল্যান্ডের কনভাটেক ইন্টারন্যাশনাল সার্ভিস জিএমবিএইচ (এক বছর ছয় মাস), মালয়েশীয় প্রতিষ্ঠান কনভাটেক মালয়েশিয়া এসডিএ বিএইচডি (এক বছর ছয় মাস), অস্ট্রেলিয়ার এসএমইসি ইন্টারন্যাশনাল প্রাইভেট লিমিটেড (এক বছর)।
বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে এসএমইসি বাংলাদেশ লিমিটেড ও এসিই কনসালট্যান্টসকেও দুই বছর ছয় মাস, জনতা ট্রেডার্সকে এক বছর ও সৈয়দ আখতার হোসেনকে ১১ মাসের জন্য নিষিদ্ধ করে বিশ্বব্যাংক।
কোনো প্রকল্পে দুর্নীতি হয়েছে, প্রতিবেদনে সেই বিষয়ে নির্দিষ্ট করে কিছু বলেনি বিশ্বব্যাংক। ঋণদাতা সংস্থাটি জানায়, বাংলাদেশ ও শ্রীলংকার বেশ কিছু প্রকল্পে তারা অনুপযুক্ত বিনিয়োগের আলামত পেয়েছে। ভারত ও শ্রীলংকাতেও এমন প্রমাণ পেয়েছে তারা।
বিশ্বব্যাংক থেকে ৪৪৮ মিলিয়ন ডলার পাওয়া একটি আন্তর্জাতিক ইঞ্জিনিয়ারিং ফার্মে গত বছরের সেপ্টেম্বরে ১২ মাসের জন্য নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। সংশ্লিষ্ট চারটি সংস্থাকেও ছয় মাস থেকে আড়াই বছর পর্যন্ত নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট জিম ইয়ং কিম বলেন, আমরা অপেক্ষাকৃত নিম্নবিত্ত ও সংহিসতায় জর্জরিত দেশগুলোতে আমাদের কার্যক্রম বাড়াচ্ছি। একই সঙ্গে আমাদের অর্থ যেন সঠিক খাতে বিনিয়োগ হয়, সেই বিষয়টিও খেয়াল রাখাও আমাদের প্রতিশ্রুতির অংশ।
জিম ইয়াং কিমের ভাষ্য- এটি শুধু আমাদের প্রকল্পের সাফল্যের জন্যই নয়, আমাদের সংস্থার কাজই এমন। আমাদের চুক্তিই আমাদের বাধ্য করে যে, যেন দুর্নীতির মাধ্যমে জনগণের কল্যাণে ব্যয়ে অর্থ হারিয়ে না যায় সেই বিষয়টি খেয়াল রাখা হয়।

error: Content is protected !!