স্টাফ রিপোর্টার>>>তুহিন
সোনাগাজীতে নাদিয়া সুলতানা সামিয়া নামে (১৪) এক কিশোরীকে শারীরিক নির্যাতনের পরও বিয়েতে রাজি করাতে পারেনি তার পরিবার। নির্যাতনের মুখে পালিয়ে নিজের বিয়ে ভেঙে দিয়েছেন ওই কিশোরী। শনিবার রাতে উপজেলার মঙ্গলকান্দি ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটে। সোনাগাজী মডেল থানার পুলিশ সোমবার গভীর রাতে হবু বর খুরশিদ আলম কে আটক করেছে।
পুলিশ, কিশোরী ও এলাকাবাসী জানায়, বগাদানা ইউনয়নের আড়কাইম গ্রামের ইসমাঈল পাটোয়ারি বাড়ির প্রবাসী আমির হোসেনের কন্যা নাদিয়া সুলতানা সামিয়া। সে গত বছর (২০১৭সালে) তাকিয়া বাজার ওসমানিয়া উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ৭ম শ্রেনির বার্ষিক পরীক্ষায় অংশগ্রহন করার পর তার পিতা-মাতা তার স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দেন।
গত কয়েক দিন পূর্বে তার পিতা-মাতা চরদরবেশ ইউনিয়নের উত্তর চরসাহাভিকারী গ্রামের লেদু মাঝি বাড়ির আহসান উল্যাহর ছেলে কাতার প্রবাসী খুরশিদ আলমের (৩২) সাথে কিশোরীর বিয়ে ঠিক করে ফেলে। তাকে ফেনী শহরের এক আত্মীয়ের বাড়িতে নিয়ে সেখানে গোপনে বিয়ের আয়োজন করে। এতে সে রাজি না হলে গোপনে তাকে তার নানার বাড়িতে নিয়ে আসে। মঙ্গলকান্দি ইউনিয়নের মঙ্গলকান্দি গ্রামের নানা মনুমিয়ার বাড়িতে এনে গত শনিবার রাতে গোপনে আবার বিয়ের আয়োজন করে। এতেও কিশোরী রাজি না হলে তার পিতা-মাতা ও হবু বর তাকে পিটিয়ে আহত করে। শারীরিক নির্যাতন সইতে না পেরে কিশোরী সামিয়া কৌশলে পালিয়ে মঙ্গলকান্দি ইউনিয়নের গ্রাম পুলিশ তাজুল ইসলামের দ্বারস্থ হয়। গ্রাম পুলিশ তাজুল ইসলাম মঙ্গলকান্দি ইউপি চেয়ারম্যানকে জানিয়ে রোববার দুপুরে কিশোরীকে উদ্ধার করে ইউপি কার্যালয়ে নিয়ে যান। ইউপি চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন বাদল বিষয়টি জানার পর কিশোরীর পিতা-মাতাকে খবর দেনন। তারা তার আহবানে না এলে সে কিশোরীকে রোববার সন্ধ্যায় সোনাগাজী মডেল থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেন।
সোনাগাজী থানার পুলিশ সোমবার গভীর রাতে অভিযান চালিয়ে হবু বর কাতার প্রবাসী খুরশিদ আলমকে তার বাড়ি থেকে আটক করে। কিশোরী সামিয়া বাল্য বিয়ে থেকে মুক্তি পেতে থানা পুলিশের হস্তক্ষেপ কামনা করেছে। সোনাগাজী মডেল থানার ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, কিশোরী সামিয়ার সাহসিকতা হাজারো কিশোরী বাল্য বিয়ে থেকে মুক্তি পেতে উৎসাহী হবে। বিষয়টি নিয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।