স্টাফ রিপোর্টার>>> ওমর আলম
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ফেনী অত্যন্ত আলোচিত ও গুরুত্বপূর্ণ জেলা। মহাসড়কের ২৬ কিলোমিটার ফেনী সড়ক বিভাগের অধীন পরিচালিত হয়। বর্তমানে ওয়ানওয়ে হবার পর এ সড়কের গুরুত্ব যেমন বেড়েছে তেমন বেড়েছে গাড়ির পরিমাণ আর গতিও। এ মহাসড়কের ফেনীর লালপুলে ফেনী-সোনাগাজী ক্রসিং রয়েছে। এ ক্রসিং পার হতে ফেনী থেকে সোনাগাজীগামী ছোট বাস, ইমা, উপকূল আর সিএনজি অটোরিক্সাগুলো সীমাহীন বিপাকে পড়ে।
অনেক সময় মহাসড়কে যানজট কিংবা যানবাহন আধিক্যের কারণে এপার থেকে ওপারে যেতে ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষা করতে হয়। শহরের মহিপাল থেকে প্রতিদিন সোনাগাজীর উদ্দেশ্যে প্রায় পঞ্চাশটির মতো বাস চলাচল করে। এছাড়া ইমা, উপকূল আর সিএনজি মিলিয়ে প্রায় ৭ হাজার আর মালবাহী প্রায় ১ হাজার গাড়ি প্রতিদিন মহাসড়ক অতিক্রম করে সোনাগাজী উপজেলার দিকে প্রবেশ করে। সদরের ৬টি ইউনিয়ন ও উপজেলার নয়টি ইউনিয়ন আর একটি পৌরসভার যানবাহনের একমাত্র ভরসা এ মহাসড়ক। মহাসড়কের এ অংশে বর্তমানে গাড়ির গতি সবচে‘ বেশি। মহিপালের ফ্লাইওভার অতিক্রম করার পর দূরপাল্লার গাড়িগুলো গতি আরো বাড়িয়ে দেয়। ফলে লালপোল ওভারপাসে প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা। গত কিছুদিন পূর্বে ২ মটরসাইকেল আরোহীকে চাপা দেয় দ্রুতগতির শ্যামলী পরিবহন। এসময় ২ জন ঘটনাস্থলে মারা যায়। এর আগে একই পরিবহনের বাসের নিচে চাপা পড়ে মারা যায় এক ট্রলি চালক। গত ৫ বছরে ছোট বড় বিভিন্ন দুর্ঘটনায় এ এলাকায় প্রাণ হারিয়েছে অন্তত শতাধিক মানুষ। মহাসড়ক সম্প্রসারণের পর এ মৃত্যুর ঘটনা বেড়ে চলেছে। পূর্বে গাড়ি কম থাকায় আর গতি কম থাকায় বিষয়টি তেমন আলোচনায় ছিল না। বর্তমানে সোনাগাজী থেকে ফেনী, ঢাকা বা চট্টগ্রাম যেতে হলে লালপোলের মহাসড়ক পার হওয়া ছাড়া উপায় নেই। আবার এসব গাড়ি সোনাগাজীতে যেতে হলেও মহাসড়ক পার হওয়া ছাড়া বিকল্প ব্যবস্থা নেই। এতে প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা আর প্রাণহানি। সোনাগাজী রোডের সিএনজি চালক আবু তাহের, ফজলু মিয়া ও আবদুল করিম জানান, মহাসড়কের ঐ পাশে কোন সিএনজি ফিলিং স্টেশন নেই। ফলে বাধ্য হয়ে গ্যাসের জন্য হলেও অন্তত দিনে ২ বার মহাসড়ক পার হতে হয়।
এ এলাকায় একটি ওভারপাসের দাবী করে আসছে ফেনী, সোনাগাজী ও মহাসড়কের ২ পাশে বসবাসরত হাজার হাজার জনগণ। বর্তমানে সে দাবী আলোর মুখ দেখতে শুরু করেছে। সম্প্রতি ফেনী জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক সভায় লালপোলে ফেনী-সোনগাজী ওভারপাস নির্মাণের বিষয়ে চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়। এ ওভারপাস নির্মিত হলে নিরাপদে ও স্বাচ্ছন্দে মহাসড়ক পার হতে পারবে যানবাহন। এ বিষয়ে জানতে ফেনী জেলা আ‘লীগ সভাপতি ও সদর উপজেলা বলেন দীর্ঘদিন ধরে ফেনীবাসী এ সংক্রান্ত একটি আবেদন করে যাচ্ছে। ফলে সরকার নীতিগতভাবে ফেনী-সোনাগাজী ওভারপাস নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সচিব ফেনী জেলা প্রশাসককে নিশ্চিত করেছেন। ফেনী সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী জাহিদ হোসেন জানান, আপাতত মহাসড়ক পারাপার নিরাপদ করতে বর্তমান ইউটার্ণের ১শ মিটার উত্তরে ঢাকার দিকে আরেকটি ইউটার্ণ খুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বিষয়টি পরিদর্শন করে গেছেন। ডিজাইন চুড়ান্ত হলে কাজ শুরু হবে।