আজ

  • বৃহস্পতিবার
  • ২৮শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • ১৪ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

ছাগলনাইয়ায় কথা কাটাকাটির জেরধরে ক্ষমতাসীন দলের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ইউপি চেয়ারম্যানসহ আহত ৫

আপডেট : সেপ্টেম্বর, ৬, ২০১৯, ৩:২৬ অপরাহ্ণ


স্টাফ রিপোর্টার>>>
ফেনীর ছাগলনাইয়া পৌর শহরের কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগ অফিসে ৫ সেপ্টেম্বর দুপুরে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচনকালীন ঘটনাকে কেন্দ্রকরে,দুই যুবলীগ নেতার মধ্যে সৃষ্ট তর্কাতর্কির জেরধরে ক্ষমতাসীন দলের দুই গ্রুপের সমর্থকদের মধ্যে দপায় দপায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।সংঘর্ষকালীন সরকার দলীয় এক ইউপি চেয়ারম্যানসহ আহত হয়েছে ৫ জন।সংঘর্ষ পরবর্তী তৃতীয় একটি পক্ষের ছড়ানো গুজবে ভাংচুর করা হয় দুই যুবলীগ নেতার ঘরবাড়ী।

ঘটনার বিষয় প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলি সূত্রে জানাযায়,৫ সেপ্টেম্বর দুপুরে দলের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন উপলক্ষে আগামী ২০ সেপ্টেম্বর ছাগলনাইয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সম্মেলন সফল করার উদ্দেশ্যে আলোচনা করতে উপজেলাধীন ১০ নং ঘোপাল ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও ইউপি চেয়ারম্যান এফ এম আজিজুল হক মানিক তার ইউনিয়নের কয়েকজন নেতা-কর্মী নিয়ে,ছাগলনাইয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের দলীয় অফিসে আসেন।ওই সময় পূর্বেথেকে দলীয় অফিসে বসা ছিলেন,ভাইস চেয়ারম্যান এনাম মজুমদার সমর্থক স্থানীয় যুবলীগ নেতা নুরনবী।এই সময় মানিকের সাথে আসা তার পরিষদের ইউপি সদস্য ও যুবলীগ নেতা শামিমের সাথে,নবী ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচনকালীন বিরোধের জেরধরে তর্কাতর্কি শুরু করেন।তর্কাতর্কির এক পর্য়ায় দলীয় অফিসে হট্টোগোল সৃষ্টি হলে,সংবাদ শুনে অন্য একটি স্থানে মিটিংরত থাকা ভাইস চেয়ারম্যান এনাম মজুমদার ও ছাগলনাইয়া থানার অফিসার ইনর্চাজ (ওসি) মেজবাহ্ উদ্দিন আহমেদ বিরোধ মিমাংশার লক্ষে দ্রুত আওয়ামীলীগ অফিসে ছুটে আসেন।তাদের পর পরই অফিসে আসেন ছাগলনাইয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা চেয়ারম্যান মেজবাউল হায়দার চৌধুরী সোহেল।এই তিন জনসহ ওই সময়ে অফিসে থাকা পাঠাননগর ইউপি চেয়ারম্যান রফিকুল হায়দার চৌধুরী জুয়েল, উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক কাজী ওমর ফারুক ও ইউপি চেয়ারম্যান মানিকের উপস্থিতিতে দলীয় অফিসে দুই যুবলীগ নেতা নুরনবী ও শামিমের মধ্যে সৃষ্ট বিরোধ সমঝোতার মাধ্যমে তাৎক্ষণিক মিমাংশা করে দেন।এরপর ওসিসহ কয়েকজন নেতা দলীয় অফিস থেকে বেরহয়ে নিজ নিজ ব্যাক্তিগত কাজে চলে যান।ওসি ও এনাম মজুমদারসহ আরো দুই একজন নেতা একসাথে অফিস থেকে বের হয়ে যাওয়ার পর,এনাম মজুমদারের এক ভাতিজা তার চাচার সাথে গন্ডগোল হচ্ছে শুনে আওয়ামীলীগ অফিসে এলে,আজিজুল হক মানিকের সমর্থকরা এনাম মজুমদারের ভাতিজার উপর অতর্কিত হামলা চালায়।এই সংবাদ শুনে মানিক দলীয় অফিসে এসে তার সমর্থকদের অফিস থেকে বেরকরে,নিজ এলাকায় নিয়ে যাওয়ার উদ্দেশ্যে ছাগলনাইয়া পৌর শহরের জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত এলে,ওই সময় জিরো পয়েন্টে এনাম মজুমদারের সাথে অবস্থানরত অতি উৎসাহী কিছু দলীয় নেতা-কর্মী হঠাৎ আজিজুল হক মানিকসহ তার সমর্থকদের উপর হামলা চালায়।হামলাকালীন সংঘর্ষে মানিক ও তার এলাকার দুর্গাপুর ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক গুরতর আহত হন।মানিকের উপর হামলা হয়েছে শুনে ওই সময় দলীয় অফিসে অবস্থানরত থাকা উপজেলা চেয়ারম্যান সমর্থক স্থানীয় কিছু নেতা-কর্মী জিরো পয়েন্টে এসে এনাম সমর্থক বাঁশপাড়া গ্রামের রুবেল নামে নিজ দলীয় এক কর্মীকে এলোপাতাড়ী মারতে থাকলে ওই সময় ঘটনাস্থলের অদূরে থাকা,ছাগলনাইয়া উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি রাঁধানগরের মোশারফ হোসেন ছুটে এসে উভয়কে থামানোর চেষ্ঠা চালানোকালীন হামলাকারীদের আঘাতে তিনি ও গুরুতর আহত হন।
এমতবস্থায় তৃতীয় একটি পক্ষ গুজব রটায় যে,মানিকের উপর হামলাকালীন পৌর যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক একরামুল হক ও ছিলো।তৃতীয় পক্ষের ছড়িয়ে দেওয়া গুজবের সূত্রধরে জিরো পয়েন্টে রুবেলের উপর হামলাকারী দলীয় নেতা-কর্মীরা এক পর্যায়ে ছাগলনাইয়া পৌর মেয়র এম.মোস্তফার বাড়ী সংলগ্ন যুবলীগ নেতা একরাম ও তার ভাই পৌর আওয়ামীলীগ নেতা নুরুল হকের বাড়ীতে হামলা চালিয়ে তাদের বসত ঘর ভাংচুর করে,এই সময় একরাম ও তার ১৩ মাস বয়সী শিশুকন্যা আহত হয়।
ছাগলনাইয়ায় আওয়ামীলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে দপায় দপায় হামলার ঘটনা ঘটছে এবং উভয় গ্রুপ শক্তি বৃদ্ধির লক্ষে নিজ দলীয় বহিঃরাগত সন্ত্রাসীদের ছাগলনাইয়ায় নিয়ে আসছে,এমন সংবাদ শুনার সাথে সাথে,ফেনী জেলা পুলিশ সুপার খোন্দকার নুরুন্নবী পিপিএম,বিপিএম তাৎক্ষণিক জেলা থেকে দাংগা পুলিশসহ গোয়েন্দা পুলিশের একটি টিম দ্রুত ছাগলনাইয়ায় পাঠিয়ে দেন।জেলা থেকে দাংগা ও গোয়েন্দা পুলিশের টিম আসার পূর্বেই ছাগলনাইয়া থানার পুলিশ ঘটনা অনেকটা নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসেন।তুচ্ছ ঘটনার জেরধরে ছাগলনাইয়ায় সরকার দলের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের সৃষ্টি করার ঘটনায় জড়ীতদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যাবস্থা গ্রহণে,পুলিশ সুপার নিজে দুইবার করে ছাগলনাইয়ায় এসে অবস্থান করে গেছেন।
সংঘর্ষের ঘটনায় আহত হওয়া ঘোপাল ইউপি চেয়ারম্যান আজিজুল হক মানিক তার উপর হামলাকারীদের বিরুদ্ধে নিজে বাদী হয়ে,ছাহলনাইয়া থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন।

error: Content is protected !!