স্টাফ প্রতিনিধিঃওমর আলম
ফেনীর ছাগলনাইয়া উপজেলাধীন ১০ নং ঘোপাল ইউপি চেয়াম্যান আজিজুল হক মানিন।গত ৭ ফেব্রুয়ারি এই ইউপি চেয়ারম্যান মানিক তার দীর্ঘদিনের পরকীয়া প্রেমিকা রেহানা আক্তার সুমিকে বিয়ে করার প্রলোভনে চট্রগ্রাম নিয়ে ফাঁদে পেলে ইয়াবা দিয়ে ফাঁসাতে গিয়ে,নিজেই ফেঁসে গেলেন ইয়াবা মামলায়।ওইদিন রেহানাকে ইয়াবাসহ গ্রেপ্তার করেন চট্রগ্রাম মহানগরীর হালিশহর থানার পুলিশ।সুমিকে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে যাওয়ার পর ওই থানার অফিসার ইনর্চাজ (ওসি) সুমিকে ইয়াবা ব্যবসায় জড়িত হওয়ার কারণ এবং এই ব্যবসায় তার সাথে কারাকারা জড়িত রয়েছে,এইসব বিষয় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদকালীন,ইউপি চেয়াম্যান মানিকের পরকীয়া প্রেমিকা রেহানা আক্তার সুমি ওসি কে জানান,মানিক তার সাথে অবৈধ সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ার পর থেকে দীর্ঘদিন যাবত সে মানিকের আজ্ঞাবহ হিসেবে,চট্রগ্রাম থেকে তার দিক নির্দেশনা মোতাবেক একাধীক ইয়াবার চালান বহন করে ফেনী শহরে পৌঁছে দিয়েছিল।সুমিকে চট্রগ্রামে ইয়াবা বুঝিয়ে দিত মামলার অপর আসামী চেয়াম্যান মানিকের আরেক সহযোগী,ঘোপাল ইউনিয়ন যুবদলের তৎকালীন ক্যাডার ইকবাল হোসেন।সুমির দেওয়া জবানবন্দীতে জড়িত থাকা দুই জনের বিষয় হালিশহর থানার ওসি প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে প্রাথমিক তদন্ত চালিয়ে,ঘটনায় ওই দুইজনের জড়িত থাকার সম্পর্কিততা পান।যার প্রেক্ষিতে মাদক মামলায় সুমির সাথে চেয়াম্যান মানিক এবং যুবদল ক্যাডার ইকবাল হোসেনকে ও আসামী করা হয়।
হালিশহর থানায় ৭ ফেব্রুয়ারি দায়েরকৃত ওই মাদক মামলার আসামী,ছাগলনাইয়া উপজেলাধীন ঘোপাল ইউপি চেয়াম্যান মানিক ১৭ ফেব্রুয়ারি মামলাটির জামিন চেয়ে চট্রগ্রাম আদালতে হাজির হলে, আদালতের বিচারক মানিকের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ প্রদান করেন।
ঘোপাল ইউপি চেয়াম্যান মানিক ফেনী জেলাব্যাপী কেন একজন আলোচিত সমালোচিত চেয়াম্যান হিসেবে পরিচিত।এর কারণ মানিক প্রথমবার যখন ইউপি চেয়াম্যান পদে দলীয় মনোনয়ন পেয়েছিলেন,প্রথম বারই সে নিজের বিজয় হাসিল করতে ১০ নং ঘোপাল ইউনিয়নের ভোটারদের ভয়ভীতি প্রদর্শন করার লক্ষে,তার দলীয় অনুসারীদের নিয়ে ওফেন অস্ত্র প্রদর্শনের মাধ্যমে ইউনিয়ন ব্যাপী এক অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি করেন।কারণ ছিল ভোটের দিন যেন ভোটারগণ ভোটকেন্দ্রে না যায়।তার আশা পূর্ণ হলেও একটি মাত্র ভোটকেন্দ্র ব্যাতিক্রম ঘটনা ঘটেছিল।ঘটনাটি ছিল তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী আজিজুল হক উনার নিজ কেন্দ্রে নিজের ভোটটি দিতে গেলে মানিক ওইদিন তার বাহিনীসহ নিজে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী আজিজকে কেন্দ্রের মধ্যে প্রকাশ্যে পিটিয়ে গুরুতর আহত করেছিল।মানিক ইউপি চেয়াম্যান হওয়ার পর প্রথম বছরই সরকারী বরাদ্দ টিআর, কাবিখা ও কাবিঠা প্রকল্পের অর্থ একক ভাবে আত্নসাৎ করায়,প্রথম বছরই তার বিরুদ্ধে তার পরিষদের সচিবসহ প্রায় ৮ জন ইউপি সদস্য অনাস্থা জ্ঞাপন করে যথাযথ কর্তৃপক্ষের বরাবর অভিযোগ পত্র প্রেরণ করেছিলেন।যার কারণে প্রথম বছরই দুর্নীতির অভিযোগে গোটা জেলায় সমালোচিত হয়েছিন চেয়াম্যান মানিক।এরপর গত ২০১৯ সালের শেষের দিকে ইউপি চেয়াম্যান মানিক নিজ বাহিনী নিয়ে ছাগলনাইয়া উপজেলা সদরে এসে, উপজেলা সদরস্থ কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগ কার্যালয়ে প্রবেশ করে উপজেলা যুবলীগ সভাপতি ও বর্তমান ছাগলনাইয়া উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়াম্যান এনামুলহক মজুমদারের সাথে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্রকরে সংঘর্ষে লিপ্ত হতে গিয়ে দলীয় নেতাকর্মিদের প্রতিরোধের মুখে পড়ে মারধরের শিকার হন।পরবর্তীতে চেয়াম্যান মানিক এই ঘটনা নিয়ে নিজের এফবিতে লাইভে এসে ছাগলনাইয়া পৌর শহরকে জ্বালিয়ে পুড়িয়ে ছারখার করে দিবেন বলে জ্বালাময়ী একটি বক্তব্য প্রচার করে, ফেনী জেলাসহ গোটা দেশে সমালোচনার ঝড় তুলেন।গত বছরের একেবারে শেষের দিকে নিজ ইউনিয়নের সমিতি বাজার এলাকায় স্বদলীয় প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার উদ্দেশ্যে,তার লালিত ক্যাডারদের অস্ত্র দিয়ে হামলা করতে পাঠালে ওইদিন তার পাঠানো ক্যাডার বাহিনীর ছোড়া গুলিতে ঘটনাস্থলেই এক প্রবাসীর মৃত্যু হয় এবং আরো দুইজন গুরুতর আহত হয়।ফেনী নদী থেকে উত্তোলন করা বালু মহালের একক আধিপত্ত কায়েম করার লক্ষেই মানিক চেয়াম্যান ওইদিন এই ঘটনাটি ঘটিয়েছিল।ওই ঘটনার পর থেকেই চেয়াম্যান মানিক অনেকটা বিপাকে পড়েযায়।এরপর চেয়াম্যান মানিকের পরকীয়া প্রেমসহ সকল অপকর্ম জনগণের নজরে আসতে থাকে।মুলকথা হলো মানিক এযাবত ক্ষমতার দাপড় দেখিয়ে যত দরণের অন্যায় অত্যচার অপকর্ম ও দুর্নীতি করেছে,ধীরে ধীরে তা জনসম্মুখে ভেসে উটছে।যার শাব্দিক অর্থ পাপ বাপকে ও ছাড়ে না।