নিজস্ব প্রতিবেদক :
ফেনীতে ব্যবসায়ীর কাছ থেকে স্বর্ণের বার ডাকাতি করে গোয়েন্দা পুলিশের ওসি নিজেই গাড়িতে করে তাকে ফেনীর সামীনা পার করে দেন বলে আদালতকে জানিয়েছে দুই সাক্ষী।
জবানবন্দিতে বলা হয়েছে, ওই ব্যবসায়ী যেন অন্য কোনো পুলিশের মুখোমুখি না হয় তা নিশ্চিত করতেই এই কৌশল নেয় অভিযুক্তরা।
ফেনীর জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম জাকির হোসাইনের আদালতে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এই জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়।
যারা সাক্ষী দিয়েছেন তারা হলেন পুলিশের গাড়ি চালক মঈনুল হোসেন ও আমজাদ হোসেন তুহিন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) এর পরিদর্শক শাহ আলম ও কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক গোলাম জিলানী এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শাহ আলম জানান, দুই গাড়ি চালক স্থানীয়। তাদের গাড়ি রিক্যুইজিশন করা ছিল। সেদিনের ঘটনার বর্ণনা দিয়ে তারা আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন।
জবানবন্দিতে বলা হয়েছে, স্বর্ণ ডাকাতির পর ব্যবসায়ী গোপাল কান্তি দাসকে ফেনীর সীমানা পার করে দেন জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল। তার সঙ্গে ছিলেন এসআই মোতাহের হোসেন, মিজানুর রহমান ও নুরুল হক।
ওই ব্যবসায়ী যাতে অন্য কোনো পুলিশ সদস্যের হাতে আটক না হন তা নিশ্চিত করতেই এই কৌশল নেন তারা।
শাহ আলম আরও জানান, আসামিদের নিয়ে পিবিআই ঘটনাস্থল ও ফেনীর সীমানা পরিদর্শন করেছে। সীমানা এলাকাটি হচ্ছে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ফেনীর খাইয়ারা এলাকার সাতবাড়িয়া।
এদিকে দ্বিতীয় দফায় তিন দিনের রিমান্ড শেষে ৫ পুলিশকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। তারা হলেন উপপরিদর্শক (এসআই) মোতাহের হোসেন, মিজানুর রহমান, নুরুল হক এবং সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) অভিজিত বড়ুয়া ও মাসুদ রানা। গোয়েন্দা পুলিশের ওসি সাইফুল ইসলাম ভূঁইয়া এখনও রিমান্ডে আছেন।
গত ৮ আগস্ট বিকেলে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় যাচ্ছিলেন স্বর্ণ ব্যবসায়ী গোপাল কান্তি দাস। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ফেনীর ফতেহপুর রেলক্রসিং এলাকায় পৌঁছলে ডিবির ওই সদস্যরা তার গাড়ি থামান। ওই সময় তার কাছে থাকা ২০টি স্বর্ণবার নিয়ে যান বলে অভিযোগ করেন ওই ব্যবসায়ী। তদন্ত করে অভিযোগের সত্যতা মিললে প্রথমে পুলিশ চারজনকে আটক করে। তাদের জবানবন্দি অনুযায়ী আরও দুজনকে আটক করা হয়।
ডিবির ওসি সাইফুল ইসলামের কাছ থেকে ১৫টি বার উদ্ধার করা হয়। এর পর গত ১০ আগস্ট রাতে গোপাল কান্তি দাস তাদের নামে ফেনী মডেল থানায় মামলা করেন। মামলায় তাদের গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
অভিযুক্ত ৬ পুলিশ কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে বলে ফেনীর পুলিশ সুপার (এসপি) খোন্দকার নুরুন্নবী বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
১১ আগস্ট প্রথম দফায় ওসি সাইফুল ইসলামের চার দিন ও বাকিদের তিন দিন করে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের আদেশ দেয় আদালত। এরপর ১৫ আগস্ট ওসিকে আবারও চার দিনের ও ১৪ আগস্ট বাকিদের তিনদিন করে রিমান্ডে পায় পুলিশ।
প্রতিবেদন : নিউজবাংলাটুয়েন্টিফোরডটকম